বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয় কর্তৃক জেলা জজ ও অধস্তন ট্রাইবুনালের জন্য ১১৫০ টি পদের বিশাল সার্কুলার প্রকাশিত - Daily Result BD

Breaking

বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয় কর্তৃক জেলা জজ ও অধস্তন ট্রাইবুনালের জন্য ১১৫০ টি পদের বিশাল সার্কুলার প্রকাশিত

এটি চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বিশাল সুখবর এবং বড় সুযোগ! বর্তমান সময়ে যেকোনো সরকারি দপ্তরে একসাথে ১১৫০টি পদের সার্কুলার খুব কমই দেখা যায়। বিচার বিভাগে এই নিয়োগ মামলার জট কমানো এবং প্রশাসনিক গতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।

তবে, এই বিশাল সার্কুলারটি সম্পর্কে আবেদন করার আগে কিছু বিষয় পরিষ্কারভাবে বোঝা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।



১. পদের ধরন 

প্রথমেই বুঝতে হবে এই ১১৫০টি পদ আসলে কাদের জন্য। বিচার বিভাগে মূলত দুই ধরণের নিয়োগ হয়:

ক. জুডিশিয়াল অফিসার (সহকারী জজ): এটি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন (BJSC) এর মাধ্যমে নিয়োগ হয়। সাধারণত প্রতি বিজেএস-এ ১০০ থেকে ২০০ জন সহকারী জজ নিয়োগ পান। ১১৫০ জন জজ একসাথে নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

খ. সহায়ক কর্মচারী (Support Staff): আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মচারীর প্রয়োজন হয়। যেমন: সেরায়েস্তাদার, সাঁটলিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, বেঞ্চ সহকারী (পেশকার), অফিস সহকারী, জারিকারক, প্রসেস সার্ভার, অফিস সহায়ক ইত্যাদি।

 এই ১১৫০টি পদের বিশাল সার্কুলারটি সম্ভবত সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত বা উচ্চ আদালতের অধীনস্থ সহায়ক কর্মচারী (৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) পদের সমন্বিত বা কেন্দ্রীয় সার্কুলার।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয় কর্তৃক জেলা জজ ও অধস্তন ট্রাইবুনালের জন্য ১১৫০ টি পদের বিশাল সার্কুলার প্রকাশিত



২. এখন আপনার করণীয় কী?

এই সুযোগটি কাজে লাগাতে হলে আপনাকে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে:

ক. মূল সার্কুলারটি সংগ্রহ ও যাচাই করুন

কোথায় খুঁজবেন: আইন ও বিচার বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা (বিশেষ করে শুক্রবারের চাকরি পাতা), অথবা নির্ভরযোগ্য চাকরির পোর্টালগুলোতে মূল বিজ্ঞপ্তিটি খুঁজুন।

কী দেখবেন:

o পদগুলোর নাম কী কী?

o কোন পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? (অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসি, নাকি স্নাতক?)

o আবেদনের মাধ্যম (অনলাইন নাকি সরাসরি ডাকযোগে) এবং শেষ তারিখ কবে?

o কোন জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন? (অনেক সময় জেলা কোটা থাকে)।

খ. প্রস্তুতির কৌশল (সহায়ক কর্মচারী পদের জন্য)

যদি এটি সহায়ক কর্মচারী পদের সার্কুলার হয়, তবে এর প্রস্তুতি বিসিএস বা ব্যাংকের মতো জটিল নয়, কিন্তু প্রতিযোগিতা অনেক বেশি হবে।

1. লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি (৭০-৮০ নম্বর): সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং সাধারণ জ্ঞানের ওপর এমসিকিউ (MCQ) বা সংক্ষিপ্ত লিখিত পরীক্ষা হয়।

o বাংলা: ব্যাকরণ (সন্ধি, সমাস, কারক, বানান শুদ্ধি, এককথায় প্রকাশ, বাগধারা) এবং ছোট অনুচ্ছেদ বা আবেদনপত্র লেখা।

o ইংরেজি: Basic Grammar (Tense, Preposition, Article, Right form of verbs, Translation) এবং ছোট Paragraph লেখা।

o গণিত: অষ্টম এবং নবম-দশম শ্রেণির পাটিগণিত (শতকরা, লাভ-ক্ষতি, সুদকষা, ঐকিক নিয়ম) ও সাধারণ বীজগণিত।

o সাধারণ জ্ঞান: বাংলাদেশ বিষয়াবলী (মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান), সাম্প্রতিক ঘটনা এবং বিচার বিভাগ সম্পর্কিত মৌলিক তথ্য।

2. ব্যবহারিক বা স্কিল টেস্ট (খুব গুরুত্বপূর্ণ):

o অধিকাংশ অফিসিয়াল পদ (যেমন: সাঁটলিপিকার, অফিস সহকারী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর) এর জন্য কম্পিউটার টাইপিং দক্ষতা বাধ্যতামূলক।

o সার্কুলারে উল্লেখিত টাইপিং গতি (বাংলা ও ইংরেজি) অর্জন করার জন্য আজ থেকেই অনুশীলন শুরু করুন। লিখিত পরীক্ষায় টিকলেও টাইপিং-এ ফেল করলে চাকরি হবে না।

গ. আবেদন প্রক্রিয়া

সার্কুলার পাওয়ার সাথে সাথে শেষ দিনের অপেক্ষা না করে দ্রুত আবেদন করে ফেলুন।

অনলাইনে আবেদন হলে ছবি এবং স্বাক্ষরের সঠিক মাপ নিশ্চিত করুন।

ডাকযোগে আবেদন হলে খামের ওপর পদের নাম, কোটা এবং নিজ জেলার নাম স্পষ্টভাবে লিখুন।


শর্তাবলীঃ

০১। আবেদনকারীর বয়স ০১,১১,২০২৫ খ্রিঃ তারিখে সর্বনিম্ন ১৮ (আঠার) বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ (বত্রিশ) বছর হতে হবে। বিভাগীয় প্রার্থীর বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৪০ বছর। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে এসএসসি/জেএসসি (সমমান) সার্টিফিকেটে উল্লিখিত বয়স চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। পরবর্তীতে কোনোরূপ পরিবর্তন, পরিমার্জন বা এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবেনা।

০২। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও বিভাগীয় প্রার্থীদের অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে আবেদন করতে হবে।

০৩। বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আবেদন ফরম পূরণের সময় Departmental Candidate এর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে হবে। বিভাগীয় প্রার্থী ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য নয়। তবে সকল চাকুরিরত প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার সময় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তিপত্রের মূল কপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো অগ্রিম কপি গ্রহণ করা হবে না।

০৪। লিখিত ও ব্যবহারিক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রার্থীগণকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় নিম্নবর্ণিত

সত্যায়নকৃত কাগজপত্রাদি দাখিল করতে হবেঃ

(ক) অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনের কপি ও ০২ (দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি;

(খ শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কিত সকল প্রকার মূল/সাময়িক সনদপত্র;

(গ) জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, অভিজ্ঞতা সনদের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদের কপি;

(ঘ) সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদপত্র ও ৯ম বা তদুর্ধ্ব গ্রেডের

গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদপত্র;

(ঙ) মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদনকারী প্রার্থীর ক্ষেত্রে সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র;

১১৫০টি পদের এই সার্কুলারটি বেকারদের জন্য একটি "গোল্ডেন অপরচুনিটি"। সঠিক তথ্য জেনে, নিজের যোগ্যতার সাথে মিলিয়ে দ্রুত আবেদন করুন এবং গোছানো প্রস্তুতি শুরু করুন। শুভকামনা!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন